মহান আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে হজরত মুহাম্মদ (সা.) ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পরিবারের সদস্যদের নামে দুটি গরু কোরবানি দিয়েছেন শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের চেয়ারম্যান সায়েম সোবহান আনভীর। গত বুধবার ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহার দিন বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় গরু দুটি কোরবানি দেওয়া হয়।
আল্লাহ পাকের দরবারে নিজেকে সোপর্দ করে ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত হয়ে একটি গরু কোরবানি করে প্রথমে হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে উৎসর্গ করেন শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের চেয়ারম্যান সায়েম সোবহান আনভীর। এরপর আরেকটি গরু যথাক্রমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, শেখ ফজিলাতুন নেছা, শেখ রাসেল, শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, শেখ কামাল ও শেখ জামালের নামে উৎসর্গ করেন তিনি।
শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের চেয়ারম্যান সায়েম সোবহান আনভীর বলেন, ‘পবিত্র ঈদুল আজহা আমাদেরকে ত্যাগের শিক্ষা দেয়। পশু কোরবানির মাধ্যমে সকলে যাতে নিজের ভেতরের পশুত্বকে কোরবানি দিয়ে পাক ও পবিত্র হতে পারি সেই শিক্ষাই দেয়।’
তিনি বলেন, ‘কোরবানির মাধ্যমে মহান রাব্বুল আলামিনের দরবারে ইসলামের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব ও পথপ্রদর্শক হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর আত্মার মাগফিরাত ও নাজাত কামনা করা হয়েছে। এর পরই হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, শেখ ফজিলাতুন নেছা, শেখ রাসেল, শেখ জামাল ও শেখ কামালের আত্মার মাগফিরাত ও নাজাত কামনা করা হয়েছে। এ ছাড়া কোরবানির অসিলায়, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানাকে সকল ধরনের বালামুসিবত থেকে হেফাজত করে সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করা হয়েছে আল্লাহর দরবারে।’
শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের চেয়ারম্যান বলেন, ‘এবার প্রথমবারের মতো তাঁদের নামে গরু কোরবানি দিয়ে গরিব-দুঃখী ও অসহায় মানুষের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। ভবিষ্যতেও ইসলামের মহামানব হজরত মুহাম্মদ (সা.) ও বঙ্গবন্ধুসহ তাঁর পরিবারের সকলের নামে কোরবানি দেওয়ার এ ধারা অব্যাহত থাকবে। কারণ মহামানব হজরত মুহাম্মদ (সা.) আমাদের ইসলামের পথপ্রদর্শক। অন্যদিকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের দিয়েছেন স্বাধীনতা। দেশ ও দেশের কল্যাণ করতে গিয়ে তিনি পরিবারের প্রায় সবাইকে নিয়ে নির্মম হত্যাযজ্ঞের শিকার হয়েছেন।
তাঁর সুযোগ্য কন্যার নেতৃত্ব ও অক্লান্ত পরিশ্রমে দেশ অপ্রতিরোধ্য গতিতে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। তাই তাঁদের নামে কোরবানি দিতে পারায় আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া আদায় করছি। এভাবে গরিব, দুঃখী ও অনাথ মানুষের পাশে থেকে খুশি ভাগাভাগি করে ঈদকে আনন্দময় করে তুলতে চাই সারা জীবন।’
প্রসঙ্গত, হজরত মুহাম্মদ (সা.) ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পরিবারের সদস্যদের নামে কোরবানি করা গরু দুটির মাংস গরিব, অসহায় ও দুস্থদের মাঝে বিতরণ করে দেন শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের চেয়ারম্যান।
দিনমজুর আবদুল জব্বার বলেন, ‘করোনার কারণে আয়-রোজগার নাই। বউয়েরও বাসাবাড়িতে কাজ নাই। এ অবস্থায় ঢাকায় কোনোমতে থাকলেও বউ-বাচ্চা নিয়ে খুব কষ্টে আছি। ঈদের দিন বাচ্চাদের একটু ভালো কিছু খাওয়াব সেই সামর্থ্যও ছিল না। বসুন্ধরা থেকে মাংস নিতে বস্তিতে খবর দেওয়া হয়েছে। এখানে এসে অনেক মাংস পেয়েছি। ঘরে ফিরে এই মাংস রান্না করে বউ-বাচ্চাদের নিয়ে পেট ভরে খেতে পারব। আল্লাহ শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের চেয়ারম্যান সাহেবের ভালো করুন।
সকিনা বেগম বাসাবাড়িতে কাজ করতেন। দুই মেয়েসহ তাঁকে রেখে স্বামী পালিয়ে গেছেন। এরপর দুই মেয়েকে নিয়ে বস্তিতে থাকেন। প্রতিবছর কোরবানির ঈদের দিন সন্তানদের মুখের দিকে তাকালে মন খারাপ হয়ে যেত তাঁর। এবার তিনি অনেক খুশি। শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের চেয়ারম্যান এবার তাঁদের অনেক কোরবানির মাংস দিয়েছেন। বাচ্চাদের নিয়ে এবার ঈদ অনেক ভালো কেটেছে তাঁর।